অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় বসার পর বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে যারা আন্দোলন করছেন তাদের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ১৭ বছরের জঞ্জাল ১৭ দিনে সমাধান হবে না। প্রেসক্লাবে আগে বসেছিলেন, দুইদিন পর পিটিয়ে উঠিয়ে দেওয়ার পর শেখ হাসিনার ছবি নিয়ে, জয় বাংলা স্লোগান দিতেন। এসব আমরা দেখেছি। বিএনপি যেখানে সময় দেওয়ার কথা বলছে, আপনারা এতো চাপ সৃষ্টি করছেন কেন?
বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে জিয়াউর রহমান সমাজ কল্যাণ ফোরামের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ছাত্র জনতার গণহত্যার দায়ে খুনি হাসিনার বিচারের দাবিতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমরা সরকারকে বলেছি, যৌক্তিক একটা সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। সেদিন পর্যন্ত কোনো রকম সংঘর্ষ, কোনো কুকীর্তিতে যাতে আমরা না যাই।
আলাল বলেন, সরকারের সমালোচনার জন্য আমাকে নানা মামলা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই শাসনের অবসান হয়েছে। প্রথমে ছাত্ররা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। পরে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ মানুষ আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই। যারা এতে অবদান রেখেছেন তাদের সাধুবাদ জানাই। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০৪ জন বিএনপি নেতাকর্মী এ আন্দোলনে নিহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে গণহত্যা, হলি আর্টিজানে হত্যা, শোলাকিয়ায় হত্যাকাণ্ড, সাগর-রুনী হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে এমন কোন কর্মকাণ্ড নেই যা বিগত সরকার করেনি। হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাইকে নির্যাতন করেছে। সাঁওতালদের জায়গার জন্য ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রামু, নাসিরনগরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। রানা প্লাজা ধ্বসে বার’শ শ্রমিকের জীবন যাওয়ার পর মন্ত্রী এসে বলেছে, বিএনপি বিল্ডিং ধরে নড়াচড়া করেছে। হাসিনা এমনভাবে কথা বলতো যে, তার মতো দাম্ভিক আর দুনিয়াতে নেই। চট্টগ্রামে গিয়ে জনসভায় বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা কি শাড়ি, চুড়ি পড়ে বসে থাকেন? একটা লাশ পড়লে দশটা লাশ পড়তে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া বলেন, একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বেও এতোদিন আমরা স্বাধীনভাবে আমাদের মতামত প্রকাশ করতে পারতাম না। ছাত্র জনতার আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের শহিদি মর্যাদা দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিগত ১৭ বছরের জন্য একটি লোক দায়ী, বিচারপতি খায়রুল হক। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করার ফলে যত লোক খুন-গুম হয়েছে, পাচার হয়েছে তার সমস্ত দায় খায়রুল হককে নিতে হবে। তাকে অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে কি উদ্দেশ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে এতো ঝামেলা করেছে তা জানতে হবে।
জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ ফোরামের সভাপতি মনজুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল প্রমুখ।