 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    প্রায় দেড়শ’ কোটি আলোকবর্ষ দূরের এক গ্যালাক্সি থেকে অনবরত আসা শক্তিশালী রেডিও সংকেত ধরা পড়েছে পৃথিবীতে। বুধবারই এমন চমকপ্রদ আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বুধবার আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা জানান, নিয়মিত সংকেতের একেকটা ফ্ল্যাশ মাত্র এক মিলিসেকেন্ড স্থায়ী হচ্ছে। কিন্তু ওই এক মিলিসেকেন্ডেই যে পরিমাণ শক্তি নিয়ে সেগুলো পৃথিবীতে আসছে সে পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করতে আমাদের সূর্যের ১২ মাস সময় লাগে!
রেডিও সিগনালটির প্রকৃতি এখনো শনাক্ত করা যায়নি।
কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ওকানাগান ভ্যালিতে অবস্থিত চাইম অবজারভেটরির চারটি একশ’ মিটার লম্বা অর্ধ-সিলিন্ডার আকৃতির অ্যান্টেনা নিয়ে গঠিত রেডিও টেলিস্কোপ রোজ পুরো উত্তর গোলার্ধের আকাশ স্ক্যান করে থাকে।
গত বছর সক্রিয় হওয়ার মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই পরপর ১৩টি রেডিও তরঙ্গের বিস্ফোরণ চিহ্নিত করে টেলিস্কোপটি। এ ধরনের বিস্ফোরণকে বলা হয় ফাস্ট রেডিও বার্স্ট (এফআরবি)। তার মধ্যে একটি সংকেত বারবার একই জায়গা থেকে আসতে থাকে।
মহাকাশ বিজ্ঞানের জন্মের পর এ নিয়ে দ্বিতীয়বার এ ধরনের অবিরাম রেডিও/বেতার সংকেতের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। এর আগে ২০১৬ সালে ভিন্ন আরেকটি টেলিস্কোপের সাহায্যে একই ধরনের নিয়মিত বেতার সংকেত পেয়েছিলেন পৃথিবীর তারা।
দু’টি পুনরাবৃত্তিকারী সংকেত বা রিপিটারের একই প্রকৃতি সম্পর্কে নিশ্চিত করেন কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির শ্রীহর্ষ টেন্ডুলকার।
এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত মোট ৬০টি এফআরবি’র মধ্যে মাত্র দু’টো রিপিটার থাকলেও এবারের নিয়মিত সংকেতটি নিয়ে বিজ্ঞানীদের উৎসাহ বেশি। কারণ এটির পরপর ৬ বার একইভাবে পুনরাবৃত্তি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার মহাকাশ পদার্থবিদ ইনগ্রিড স্টেয়ারস বলেন, যেহেতু দ্বিতীয়বারের মতো একই জাতীয় নিয়মিত রেডিও সংকেতের বিস্ফোরণ পাওয়া গেছে, তার অর্থ হলো এ ধরনের আরও সংকেত মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে।
‘এবং যত বেশি এমন রিপিটার ও তাদের ভিন্ন ভিন্ন সূত্র আমরা গবেষণার জন্য পাবো, তত ভালোভাবে আমরা এই মহাজাগতিক হোলকধাঁধার রহস্য বুঝতে পারব – কীভাবে এ ধরনের সিগনালের উৎপত্তি আর কী কারণে এদের সৃষ্টি,’ বলেন তিনি।
দ্রুতগতির এই বেতার তরঙ্গের বিস্ফোরণগুলোর কারণ হিসেবে নক্ষত্রের বিস্ফোরণ থেকে শুরু করে ভিনগ্রহী প্রাণী বা এলিয়েনের পাঠানো সংকেত – এমন অসংখ্য সম্ভাবনার কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু নিশ্চিত হয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না।
এখনো এমন কোনো স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি যা থেকে নিশ্চিত করে বলা যায় সংকেতগুলো কোত্থেকে আসছে।