ওবায়দুল কাদেরকে ঠাকুরগাঁওয়ে আমন্ত্রণ জানালেন মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেধক
  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৪

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কথায় কথায় ‘আমরা পালাব না’ উল্লেখ করে তাকে ঠাকুরগাঁওয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘আবার আমার ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে আসতে চেয়ে ছিলেন। এখন তিনি কোথায় পালিয়ে আছে। নাকি আবার আমার ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে এসে লুকিয়ে আছে। আমি আপনাকে (ওবায়দুল কাদের) আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’

বুধবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপি আয়োজিত ঐক্য ও সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সকলেরই গণতান্ত্রিকভাবে কথা বলার অধিকার রয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থাকাকালে জনগণের মুখ চেপে ধরেছিল। দেশটাকে তারা লুটপাট করেছে। কেউ কথা বললে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। ইতোমধ্যে আমাদের দলের ৭০০ নেতাকর্মীকে গুম করেছে আওয়ামী লীগ। গোলাম আযমের ছেলেকে গুম করে আয়নাঘরে আট বছর ধরে আটক করে রেখেছিল। আটটি বছর এক ঘরে বহু কষ্টে জীবনযাপন করেছে সে। তার অপরাধ, সে গোলাম আযমের ছেলে। শেখ মুজিবরের কন্যা এত নিষ্ঠুর-নির্মম হয় কিভাবে?’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত বছরের সেপ্টেম্বরে রুহিয়ায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। দলীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে তারা। আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে আহত করেছে। আবার তারাই বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর মিথ্যা মামলা করেছে। এই হলো আওয়ামী লীগ সরকার।

তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় এক রাতেই ১৪টি মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। আওয়ামী লীগ নিজেরাই হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করে, মন্দির ভাঙচুর করে। তাদের সম্পদ লুট করে সেটা বিএনপির ওপর চালিয়ে দেয়। জনগণ এখন সবই বুঝে, কারা হামলা চালিয়েছে মন্দিরে।’

তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ভারতে বসে হিন্দু ভাইদের ঢাল বানিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে শেখ হাসিনা। যখনই তারা হারতে থাকবে, জনগণ তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, নির্বাচনে হেরে যাবে, আন্দোলনে হেরে যাবে তখনই তারা বলবে যে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে, লুটপাট হচ্ছে। অথচ শত শত বছর ধরে এই বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান মিলে একসাথে বসবাস করে আসছে। আমরা একে অপরের বাড়িতে বিয়ে, পৌষপার্বণসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাই। একে অপরের বাড়িতে বাতাসা, ক্ষির খাই। এই যে এক্য, এই এক্যে তারা ফাটল ধরাতে চায়। তারা যত ষড়যন্ত্রই করুক, আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবেলা করতে হবে।’

মির্জা ফখরুল এর আগে সদরের গড়েয়া ইউনিয়নের ডিগ্রি কলেজ মাঠে ঐক্য ও সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

রুহিয়া থানা বিএনপির আয়োজনে শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশে রুহিয়া থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, আনসারুল হক পৌর বিএনপির সভাপতি মো: শরিফুল ইসলাম শরিফ, জেলা যুবদল সভাপতি চৌধুরী মহেবুল্লাহ আবু নুর, সদর থানা সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, মহিলা দলের সভাপতি ফোরাতুন নাহার প্যারিস, রুহিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক মানিকসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।

শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
LifePharm