সুন্দরবনে জীববৈচিত্র্য বাড়ছে বলে জানিয়েছে ভারতের প্রাণিবিষয়ক জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (জেডএসআই) গবেষকরা।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস।
জেডএসআই’র গবেষকরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী একটি নদীতে নতুন এক ধরনের শামুকের সন্ধান মিলেছে। ওই এলাকায় জাপান ও তাইওয়ানের মাছ দেখা গেছে। এ ছাড়া রাজ্যের সমুদ্র উপকূল থেকে এক বিশেষ ধরনের সামুদ্রিক প্রবাল পাওয়া গেছে, যা ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়াসহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উপকূলগুলোতে পাওয়া যায়।
জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার সুন্দরবন আঞ্চলিক অফিস জানিয়েছে, এই প্রথমবার রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকায় এই প্রাণীগুলো পাওয়া গেল। বর্তমানের প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রাণীগুলো সংরক্ষণ করে গবেষণা করবেন সংস্থার গবেষকরা।
সুন্দরবন আঞ্চলিক অফিসের কর্মকর্তা জেএস যোগেশ কুমার জানান, এসব প্রাণী আগে কখনো রাজ্যে পাওয়া যায়নি। কীভাবে তারা এখানে এলো এবং এখানকার জলবায়ু ও অন্যান্য পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে কি না ইত্যাদি বিষয় নিয়ে গবেষণা করবেন গবেষকরা।
জেডএসআইয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সুন্দরবনে ১৭৭ প্রজাতির শামুক রয়েছে। আরও এক প্রজাতির খোঁজ মিলল সেখানকার একটি নদীতে। এখনো এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে মানুষের পা পড়েনি। নদী, খাঁড়িতে গবেষণা করলে আরও অনেক নতুন প্রজাতির খোঁজ পাওয়া যেতে পারে। সেইভাবে খুঁজতে খুঁজতেই গবেষকরা নতুন প্রজাতির শামুক খুঁজে পেয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছোট সাপের মতো দেখতে মাছগুলোকে উত্তর বঙ্গোপসাগরের কাছে একটি মৎস বন্দরে পাওয়া গেছে। মাছটির মাথা মোটা, শরীরের বাকি অংশ সরু। নাম ব্ল্যাকস্পট ব্যান্ড ফিশ। জাপান ও তাইওয়ানের উপকূলে সাধারণত এই মাছগুলোকে পাওয়া যায়। তবে রাজ্যের উপকূলে এদের দেখা মেলেনি। বহু বছর আগে এদের এক প্রজাতির দেখা পাওয়া গিয়েছিল মহারাষ্ট্র, কর্নাটক ও কেরালার উপকূলে। রাজ্যের উপকূলে কীভাবে এই মাছ এসে পৌঁছাল তা নিয়ে গবেষণা করছেন গবেষকরা।
এ ছাড়া দিঘার উপকূল থেকে এক বিশেষ ধরনের প্রবাল উদ্ধার করেছেন গবেষকরা। এই প্রবালের নাম ‘স্নো ফ্লেক সফট কোরাল।’ এই ধরনের প্রবাল দিঘার উপকূলে কীভাবে এলো তা খুঁজতে গিয়ে গবেষকরা মনে করছেন, সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া ট্রলারের নিচের অংশে বা মৎস্যজীবীদের জালে আটকে পড়ে যায় প্রাণীটি। পরে তাকে উপকূলের কাছে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সেই প্রবালকেই উদ্ধার করেছে জেডএসআইয়ের গবেষকরা।