২০১৩ সালের পর আইসিসি ইভেন্টের কোন শিরোপা জিততে পারেনি ভারত। শিরোপা খরা কাটাতে ভারতকে চাপ সামলানোর পথ খুঁজে বের হবে বলে মনে করেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও কোচ মিসবাহ উল হক। তার মতে আইসিসি ইভেন্টে দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পরও ভারতের শিরোপা জিততে না পারার কারণ চাপ সামলাতে না পারা। শিরোপা জিততে চাপকে জয় করতে হবে টিম ইন্ডিয়াকে।
১৯৮৩ সালে প্রথমবারের মত আইসিসি ইভেন্টে প্রথম শিরোপা জয় করে ভারত। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিলো তারা। এরপর ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাজিমাত করে ভারত। ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি পাকিস্তানকে হারিয়ে ট্রফি জিতে নেয় টিম ইন্ডিয়া।
এরপর ২০১১ সালে দ্বিতীয়বারের মত ওয়ানডে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। ২০১৩ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর আর আইসিসির কোন শিরোপাই জিততে পারেনি দলটি। দু’বার আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেও শিরোপার দেখা পায়নি তারা। এমনকি ২০২৩ সালে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে টানা ১০ ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠলেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে অসহায় আত্মসমর্পন করে রোহিত-কোহলিরা।
আইসিসি ইভেন্টে দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পরও ভারতের শিরোপা জিততে না পারার কারণ হিসেবে চাপকে বড় করে দেখছেন মিসবাহ। তার মতে, এশিয়ার দলগুলোর উপর অনেক বেশি প্রত্যাশা থাকার কারণে চাপের মুখে পড়ে যায় দলগুলো।
স্টার স্পোর্টসের প্রেস রুমের শো’তে মিসবাহ বলেন, ‘ভারত, পাকিস্তানসহ এশিয়ার অন্যান্য দেশে বিশাল জনসংখ্যা এবং অনেক বেশি প্রত্যাশার কারণে চাপের মুখে পড়ে যায় দলগুলো। এত বেশি চাপ থাকে যে, যা পারফরমেন্সের উপর প্রভাব ফেলে। গত কয়েকটি ইভেন্টে চাপের সাথে লড়াই করতে হয়েছে ভারতকে। এজন্য সাফল্য নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করতে পারেনি ভারত।’
আইসিসি ইভেন্টে নকআউট ম্যাচে ভারতকে চাপ সামলানোর পথ খুঁজে বের করতে হবে বলে মনে করেন মিসবাহ, ‘অস্ট্রেলিয়ার জন্য এটি বড় সমস্যা নয়, কিন্তু পাকিস্তান এবং ভারতের জন্য এ ধরনের চাপের মধ্যে খেলা বড় চ্যালেঞ্জিং। ভবিষ্যতে কিভাবে এমন চাপ সামলাবে দলগুলো, সেটিই দেখার বিষয়। বিশেষভাবে, ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এটি। আইসিসি ইভেন্টে সফল হতে চাইলে চাপ সামলানোর পথ খুঁজে বের করতে হবে করে ভারতকে।’
শক্তিশালী বোলিং ও ব্যাটিং লাইন-আপের জন্য আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে এগিয়ে রাখছেন মিসবাহ। তিনি বলেন, ‘এখনকার ভারতের দলটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। তাদের শক্তিশালী বোলিং লাইনআপ আছে। ব্যাটিং সবসময়ই শক্তিশালী ছিল। বোলিংয়ে উন্নতির কারণে দ্রুত তাদের খেলার মান বেড়েছে। বুমরাহ-সামি-সিরাজদের মত পেসার এবং হার্ডিক পান্ডিয়ার মত অলরাউন্ডার থাকার কারণে ভারতীয় ক্রিকেটের মান অনেক বেশি বেড়েছে। চাপ সামলানোর ক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেশি-বেশি ক্রিকেট খেলার কারণে তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। তাদের সমস্যায় ফেলতে প্রতিপক্ষকে অনেক চেষ্টা করতে হবে, যা কঠিন কাজ। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ার দিকে তাকালে দেখা যায় দৃঢ় মানসিকতার কারণে তারা যেকোন বাধা অতিক্রম করে। বড় ম্যাচে যেকোন চাপ সামলাতে পারে তারা।’