‘সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা তালিকা অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন’ এমন দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, সরকার যে তালিকা ধরিয়ে দেন সেই তালিকা অনুযায়ী নির্বাচনের দিন নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এটিই হচ্ছে বর্তমান নির্বাচনের অবস্থা।
সোমবার বিকেলে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ নির্বাচনের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই এমন মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, গোটা দেশের জনগণ, সব বিরোধী দলের বিরোধিতা এবং আন্তর্জাতিক মহলের অব্যাহত আহ্বান উপেক্ষা করে সরকার একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করার অপরিণামদর্শী আত্মঘাতী খেলায় মেতে উঠেছে। শেখ হাসিনার একগুয়েমি ভাব দেখে মনে হচ্ছে তিনি দেশ এবং জনগণকে ধ্বংস করেই তবে বিদায় নেবেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের কথা বলছে, কিন্তু আদৌ কোনো উন্নয়ন করেনি তারা। তারা উন্নত করেছে আওয়ামী লীগ নেতাদের, এমপি, মন্ত্রী ও ঠিকাদারদের। উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে গেছে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহম্মেদ ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহম্মেদ। বিএনপি নেতা-কর্মীরা পুলিশের ভয়ে বাঁশবাগানের ভেতরে লুকিয়ে থাকলেও তা টের পায়। পুলিশ তাদেরকে ধরে নিয়ে হাজতে ঢোকায়। অথচ কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে যখন সাবেক পুলিশ প্রধান পালিয়ে যায় তখন তা আর পুলিশ টের পায় না। এর মানে জনগণ কি বোঝে না। এগুলো প্রধানমন্ত্রীর অজনা নয়। যে বেনজীর আহম্মেদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বারবার অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসাতে সামনে থেকে কাজ করেছেন। এখন কী এমন হলো যে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, টাকা পয়সার ভাগবাটোয়ারার দ্বন্দ্বেই এখন বেনজীরকে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দেশের জন্য কাজ করেছেন। তিনি টাকার পেছনে ছোটেননি। দেশের মানুষকে ভালো বেসেছেন বলেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার আদর্শ বুকে নিয়ে চলতে হবে। তার আদর্শ মেনে চললেই এ অবৈধ শেখ হাসিনার সরকারকে বিদায় করা সম্ভব। তিনি প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে জিয়াউর রহমানের আদর্শকে অনুসরণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সসম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক জাহানারা সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, আবুল কালাম আজাদ ও সাবিরা নাজমুল।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন।