বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আজ বাংলাদেশের সীমান্ত অনিরাপদ। বিপন্ন স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার-নির্বিকার। রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, অবৈধ ক্ষমতালিপ্সার কারণে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটের অধিকার হারিয়ে জনগণ আজ নিজ দেশেই যেন পরাধীন এবং বন্দী। অরক্ষিত দেশের সীমান্ত। সেন্টমার্টিন প্রায় অবরুদ্ধ। বাংলাদেশের নাগরিকরা সেখানে যেতে নিরাপদ বোধ করছেনা। সেন্টমার্টিনকে ঘিরে গত কয়েকদিন মিয়ানমার যা করছে, এটি দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য চূড়ান্ত হুমকি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে দীর্ঘদিন থেকেই চরম অস্থিরতা চলছে। মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ভারী অবৈধ অস্ত্র ঢুকছে। যুদ্ধকবলিত মিয়ানমারের জান্তা সেনারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও প্রায়শই ঢুকে পড়ছে।
বাংলাদেশ সরকার যথারীতি জান্তা সেনাদের আগ্রাসী ভূমিকায় নির্বিকার রয়েছে।
পুনরায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। অথচ গত ৭/৮ বছরেও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে জোর করে ঠেলে দেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজনকেও মিয়ানমার ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। কেন সম্ভব হয়নি?
রিজভী বলেন, বাংলাদেশ কী কোনো দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে? তাহলে কার স্বার্থ রক্ষা করছে? মিয়ানমারের ব্যাপারে বাংলাদেশ কী নীতি অবলম্বন করছে, অবশ্যই জনগণের সেটি জানার অধিকার রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তাঁবেদারি আচরণের কারণে বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন আজ কোনো সীমান্তেই নিরাপদ নয়। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশসহ মোট সাতটি দেশের সীমান্ত রয়েছে। অন্য কোনো দেশের সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা করার সাহস না করলেও বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায়শই বিএসএফের গু
গত ৯ জুন কুমিল্লা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এভাবে ভারতের সঙ্গে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি আর তাঁবেদারি মানসিকতার কারণে বাংলাদেশ সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ করার সাহস এবং স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছে আওয়ামী সরকার। তিনি আরও বলেন, এই আনন্দঘন ঈদে মানুষের মনে সুখ নেই, আনন্দ নেই। মানুষের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে এই লুটেরা সরকার। মানুষের ঘরে খাবার নেই। উচ্চমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরাও এখন অর্থনৈতিকভাবে কোণঠাসা, তারাও কোরবানি করার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছে। কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা কম, যারা আছেন বেশিরভাগ সরকারি দলের লুটেরা, অবৈধ অর্থের মালিকরা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই চরম অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শেয়ার বাজার থেকে আরম্ভ করে পাড়া মহল্লার কাঁচা বাজার পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে অসহায় সাধারণ জনগণ। লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৮ শত টাকা, ঈদে খাবার প্রস্তুতে ব্যবহারকৃত মসলা যেমন, এলাচের কেজি ৪ হাজার টাকা, লবঙ্গের কেজি প্রায় ২ হাজার, দারচিনির কেজি প্রায় ৬ শত টাকা, তেজপাতার কেজি ৩ শত টাকা, জনগণ যেন এক খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির আগ্নেয়গিরির উপর বসে আছে।
শশার কেজি-১২০ টাকা, কাচা মরিচ ২৬০ টাকা, করলা কেজি প্রতি ৭০ টাকা অর্থাৎ শুধু মাছ মাংসই নয় শাক-সবজিতেও হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের সবকটি ব্যাংক এখন প্রায় দেউলিয়া। শুধু ডলার সংকটই নয়, ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। এমনকি ঈদের সময়েও ব্যাংকে গিয়ে গ্রাহকরা চাহিদামতো নগদ ৫ হাজার টাকাও তুলতে পারছেন না। ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছেন না!