রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে স্বাগতিক পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ। ২১ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে দেশটিকে প্রথমবারের মতো টেস্ট হারিয়েছে টাইগাররা। সেই সাথে পেয়েছে পাকিস্তানের মাটিতে প্রথম কোনো জয়ের স্বাদ। তবে ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে তারা ভুলেননি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শুরু থেকেই সমর্থন দিয়ে আসছিলেন ক্রিকেটাররা। মাঠে আসতে না পারলেও নিজ অবস্থান থেকে আওয়াজ তুলেছিলেন ছাত্র-জনতার পক্ষে। এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া ঐতিহাসিক টেস্ট জয়টা বাংলাদেশ ক্রিকেট দল উৎসর্গ করল সেই আন্দোলনের শহীদদের প্রতি।
রোববার (২৫ আগস্ট) অবিস্মরণীয় এই জয়ের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গিয়ে বিষয়টি জানান বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। মাইক্রোফোন হাতে বাংলাতেই তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, আমাদের এই জয়টা তাদের উৎসর্গ করছি। তাদের জন্য অনেক অনেক দোয়া।’
এই জয়টা বাংলাদেশের জন্য কত বেশি স্পেশাল, তা বলে পরিসংখ্যান। পাকিস্তানের বিপক্ষে এর আগে টেস্টে ১৩ বারের মুখোমুখি দেখায় হেরেছে ১২টিতেই। অন্যটি হয় ড্র। আবার পাকিস্তানের মাটিতেও তাদের কখনো হারাতে পারেনি টাইগাররা। আগের ২০ দেখায় হার প্রতিটিতেই।
তবে এবার মুশফিকুর রহিমের সাথে গোটা দলটার দারুণ পারফরম্যান্সে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডিতে যেখানে আগে ব্যাট করে সৌদ শাকিল আর মোহাম্মদ রিজওয়ানের সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৪৪৮ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান।
জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ থামে ৫৬৫ রানে। মুশফিকুর রহিম খেলেন ১৯১ রানের ইনিংস। তাছাড়া সাদমান ইসলাম ৯৩, মেহেদী মিরাজ ৭৭, লিটন দাস ৫৬ ও মুমিনুল হক খেলেন ৫০ রানের ইনিংস।
১১৭ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত ১১৭ রানের লিড ভাঙতে পারে বটে, তবে বেশিদূর আগাতে পারেনি। ৫৫.৫ ওভারে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় তারা। জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন তখন মোটে ৩০ রান।
যা খুব সহজভাবেই পাড়ি দেয় বাংলাদেশ। কোনো বিপদ আসতে দেননি জাকির হাসান-সাদমান ইসলাম জুটি। ছোট এই লক্ষ্য ৬.৩ ওভারেই ছুঁয়ে ফেলে টাইগাররা। এই জয়ে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।