স্বপ্নের ফাইনালে বাংলাদেশ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারিয়েই সাফ জয়ের পথে টাইগাররা। ‘দুই’ গোলরক্ষকের দারুণ নৈপুণ্যে প্রতিবেশী দেশটিকে আটকে দিয়েছে তারা। ভারত অনূর্ধ্ব-২০ দলকে টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়েছে মেহেদী হাসানের দল।
নেপালের ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সে সোমবার (২৬ আগস্ট) সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় দুই দল। যেখানে নির্ধারিত সময় ১-১ ব্যবধানে শেষ হলে টাইব্রেকারে নির্ধারণ হয় ভাগ্য।
বাংলাদেশ আজ লড়াই করেছে দুই গোলরক্ষকে ভর করে। নিয়মিত অধিনায়ক মেহেদী হাসান তো ছিলেনই, তিনি চোটে পড়লে দায়িত্ব নেন মোহাম্মদ আসিফ। মাঠে নেমেই আসিফকে একটা গোল হজম করতে হলেও। টাইব্রেকারে সেই আসিফই হয়ে উঠেন চীনের প্রাচীর।
শুরু থেকে রক্ষণ জমাট রেখে পাল্টা আক্রমণের ছকে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ভারত মেলে ধরে আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা; তবে তাদের সব প্রচেষ্টাই মুখ থুবড়ে পড়তে থাকে বাংলাদেশের রক্ষণে। পোস্টের নিচে আত্মবিশ্বাসী মেহেদী হাসান শ্রাবন বারবার করেন ধরাশায়ী।
দারুণ আত্মবিশ্বাসে শ্রাবণ বারবার ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন ভারতের আক্রমণ। ১৩তম মিনিটে গগমেশ্বর গেওয়ারির জোরালো পা বাড়িয়ে আটকে দিয়ে দলকে বাঁচান এই গোলরক্ষক।
এদিকে, ধীরে ধীরে নিজেদের মেলে ধরতে থাকেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। যার জেরে ৩৫ মিনিটে মেলে সাফল্য। সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। রাব্বি হোসেন রাহুলের জোরালো আড়াআড়ি ক্রস গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে চলে যায় আসাদুল মোল্লার পায়ে। নিখুঁত টোকায় জাল খুঁজে নেন তিনি।
ব্যবধান ধরে রেখেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধেও চেষ্টা করে বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে খেলার চেষ্টা করতে থাকে টাইগাররা। ৫০তম মিনিটে আরো একটা সুযোগও মেলে। তবে পিয়াস আহমেদ নোভার শট ফেরান ভারত গোলরক্ষক।
খেলায় ফিরতে আক্রমণের পর আক্রমণ করতে থাকে ভারতের ফরোয়ার্ডরা। বারবার বাংলাদেশের রক্ষণ কাঁপাতে থাকে তারা। এমনই এক আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত চোট পেয়ে বসেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে গগমসার গয়ারির বুটের আঘাতে ব্যথা পান মেহেদী।
বদলি নামেন আসিফ হোসেন। কিন্তু তিনি নামার একটু পরই গোল হজম করে বসে বাংলাদেশ। বক্সের ভেতর থেকে নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন রিকি মিতে হোবাম। সমতা ফেরে খেলায়। সেই সমতা নিয়েই শেষ হয় নির্ধারিত সময়। কোনো দল আর পায়নি গোলের দেখা।
বরং যোগ করা সময়ে কামাচায় মারমা লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বাংলাদেশ। এরপরই শেষ বাঁশি বাজান রেফারি। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুসারে খেলার ভাগ্য গড়ায় সরাসরি টাইব্রেকারে।
যেখানে ভারতের প্রথম শটই ঝাঁপিয়ে আটকে দেন আসিফ। তবে পরের তিনটি শটে গোল আদায় করে নেয় ভারত। কিন্তু পঞ্চম শট ফের আটকে দেন আসিফ। সাথে সাথেই নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের ফাইনাল।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের হয়ে চারটি শটেই জাল খুঁজে পায়। পিয়াস আহমেদ নোভা, পারভেজ আহমেদ, শাকিল আহাদ তপু ও মঈনুল ইসলাম মঈন গোল করেন।