শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) নিয়োগ নিয়ে দেশের কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না মর্মে দেয়া ‘দায়মুক্তির বিধান’ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
আইন মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এই বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট রিট দায়ের করা হয়। রিটে দায়মুক্তি দেয়া কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।
রিটকারী আইনজীবীরা হলেন আব্দুল্লাহ সাদিক, জিএম মোজাহিদুর রহমান, মিসবাহ উদ্দিন, জোবায়দুর রহমান, নোয়াব আলী, আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী, সাজ্জাদ সরওয়ার, মোজাহিদুল ইসলাম, মিজানুল হক ও একেএম নুরুন নবী।
রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, ‘রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২ এর ধারা ৯ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। ধারা ৯ এর মাধ্যমে ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বিচার বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘যা সংবিধানের ২৬, ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদ ও ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতি এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপন্থি। এই ধরনের দায়মুক্তি সম্পূর্ণভাবে অসাংবিধানিক। দেশের তিনটি বিভাগ রয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিভাগ। আইন সভা আইন পাস করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করতে পারে না। কারণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। ৯ ধারার মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। রিট আবেদনে আইন মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনকে বিবাদী করা হয়।’
২০১৪-২০১৮ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ নিয়ে দেশের কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না বলে ২০২২ সালে দায়মুক্তির বিধান সম্বলিত ওই আইন করা হয়।
আইনের ৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতঃপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি ও তাদের সম্পাদিত কার্যাবলি এবং সেই অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ বলে গণ্য হবে এবং সেই বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না।
সূত্র : ইউএনবি