লিভ-টুগেদারে থাকতে পুলিশি নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে আবেদন, অতঃপর…

নিজস্ব প্রতিবেধক
  • প্রকাশিত : বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪

ঘটনাটি ভারতের। দেশটির মুম্বাই আদালতে লিভ-টুগেদার বা লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার জন্য পুলিশি নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছিল যুগল। তাদের দাবি, দু’জনের ধর্ম ভিন্ন হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। কিন্তু মুম্বাই হাইকোর্ট তাদের আবেদনে সাড়া দেননি। উল্টো আদালতে ধমক খেতে হয়েছে ভিনধর্মী যুগলকে। তাদের প্রতি আদালতের প্রশ্ন, “আপনারা লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে চান বলে পুলিশ আপনাদের পাহারা দেবে? পুলিশের কি আর কোনও কাজ নেই?”

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০ বছর বয়সি এক মুসলিম যুবক তার ১৯ বছর বয়সি প্রেমিকার সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে চান। কিন্তু পরিবার তাদের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন যুবক। প্রেমিকাকে নিয়ে তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তরুণীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের আটকায়। তরুণীকে উদ্ধার করে আপাতত একটি সেফ হোমে রেখেছে পুলিশ। তিনি বাবার বাড়িতে ফিরতে নারাজ। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন যুবক। ছেলের বক্তব্য, তার প্রেমিকা প্রাপ্তবয়স্ক। নিজের ইচ্ছায় তিনি ঘর ছেড়েছেন। অভিযোগ, বজরং দল এবং অন্য কয়েকটি সামাজিক গোষ্ঠীর উস্কানিতে তার পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাইছে না।

তরুণীর পরিবারের পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান, যুবকের মামলাটি গ্রহণযোগ্য হওয়াই উচিত নয়। কারণ, ২১ বছর বয়স হয়নি তার। ভারতের আইন অনুযায়ী, পুরুষের ক্ষেত্রে বিবাহের ন্যূনতম বয়স ২১।

আদালতের পর্যবেক্ষণ, তরুণী প্রাপ্তবয়স্ক। তাই পরিবারের সঙ্গে তিনি থাকতে না-চাইলে তাকে জোর করা যাবে না। কিন্তু তাদের লিভ-ইন সম্পর্কের জন্য পুলিশি নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে আদালত মনে করে না।

আবেদনকারী যুবকের প্রতি বিচারপতিদের প্রশ্ন, “তরুণী আপনার সঙ্গে থাকতে শুরু করলে তাকে নিরাপত্তা কে দেবে? আপনারা লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে চান বলে পুলিশ আপনাদের বাড়ির সামনে দিনরাত পাহারা দেবে? পুলিশের কি আর কোনও কাজ নেই? পুলিশকে আমরা এমন কোনও নির্দেশ দিতে পারব না।”

তরুণীর সঙ্গে আলাদা করেও কথা বলেছিলেন বিচারপতিরা। তাদের পর্যবেক্ষণ, তরুণী জীবন সম্পর্কে এখনও অভিজ্ঞ নন। তার ভবিষ্যৎ নিয়ে স্পষ্ট কোনও ধারণা নেই। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, “আপনাকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যদি যুবক ছেড়ে চলে যান, তখন কী করবেন?” তরুণী উত্তরে বলেন, “কোনওভাবে জীবন কাটিয়ে দেব।”

তরুণী ‘স্বপ্নের জগতে’ বাস করছেন বলেও মন্তব্য করেন আদালত। আপাতত ওই তরুণীকে সেফ হোমেই থাকতে বলেছেন বিচারপতিরা। সেখানে তার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তার বাবা। কিন্তু যুবকের কাছে তরুণীকে থাকার বা পুলিশ প্রহরার কোনও অনুমতি আদালত দেননি। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
LifePharm