ইনকিলাব ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগ, নতুন নির্বাচন এবং গাজায় জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে শনিবার তেল আবিবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে লাখো ইসরাইলি। তারা বলছেন, নেতানিয়াহুকে বরখাস্ত ছাড়া হামাসের সঙ্গে জিম্মি বিনিময় চুক্তি অসম্ভব।
শনিবার হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার দলের কট্টরপন্থী মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। তারা দ্রুত নতুন নির্বাচন এবং গাজায় জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানায়।
বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত গাজায় বন্দী ইসরাইলি জিম্মিদের পরিবারগুলো তাদের বক্তব্যে জানায়, দেশটির নেতৃত্ব থেকে নেতানিয়াহুকে সরানো না হলে গাজায় হামাসের সঙ্গে জিম্মি বিনিময় চুক্তি করা সম্ভব হবে না। বিক্ষোভকারীরা এ সময় নেতানিয়াহুকে প্রাইমমিনিস্টার না বলে ক্রাইমমিনিস্টার বলে সম্বোধন করেন এবং ‘ক্রাইমমিনিস্টার’ ও ‘যুদ্ধ বন্ধ করুন’ লেখা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৬৬ বছর বয়সী ঠিকাদার শাই এরেল বলেন, আমি এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছি, কারণ আমি আমার নাতির ভবিষ্যত নিয়ে ভয় পাই। আমরা যদি বাইরে না আসি এবং এই ভয়ঙ্কর সরকারের কবল থেকে তাদের মুক্ত না করি তাহলে তাদের কোনো ভবিষ্যত থাকবে না।
জনতার উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ইসরাইলের অভ্যন্তরীর্ণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের সাবেক প্রধান ইউভাল ডিস্কিন নেতানিয়াহুকে ইসরাইলের সবচেয়ে খারাপ প্রধানমন্ত্রী বলে নিন্দা করেন। অনেকেই দেশটির ক্ষমতাসীন ডানপন্থী জোটের বিরুদ্ধে গাজা যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করা এবং দেশের নিরাপত্তা ও জিম্মিদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
৫০ বছর বয়সী ট্যুর গাইড ইয়োরাম বলেন, তিনি মনে করে ইসরাইলে এই মুহূর্তে নির্বাচন দরকার। আমরা যদি ২০২৬ সালের নির্বাচনের মূল তারিখের জন্য অপেক্ষা করি, তাহলে সেটি নিশ্চিতভাবে কোনো গণতান্ত্রিক নির্বাচন হবে না।
ইসরাইলের সরকারবিরোধী প্রতিবাদ সংগঠন হোফশি ইসরাইল ধারণা করছে, দেড় লাখের বেশি মানুষ শনিবারের এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। তারা এই বিক্ষোভ সমাবেশকে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সবচেয়ে বড় সমাবেশ বলে অভিহিত করেছে।
আট মাসের বেশি সময় ধরে চলা গাজা যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৫০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া এ সময় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। সূত্র : আরব নিউজ ও আনাদোলু।