বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন যৌক্তিক ও ন্যায্য। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘অবিলম্বে ছাত্রদের দাবি মেনে নিন। না হলে পরিস্থিতি ভয়ানক হবে।’
সোমবার (৮ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় কনফারেন্স রুমে এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন গুরুতর অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় কুরআন খতম ও দোয়া মোনাজাতের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল। এসময় খালেদা জিয়াসহ দলের অসুস্থ নেতাকর্মীদের সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।
কোটা আন্দোলন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘সরকারের ইচ্ছা ও আদালতের ইচ্ছা এক হয় কী করে? যে কোটা আন্দোলনে সরকার কোটা বাতিল করেছিল সেটি তখন কোর্টও রায় দিয়েছিল। এখন আবার আদালতকে দিয়ে সেটি পুনর্বহাল করা হয়েছে। আসলে আওয়ামী লীগ সরকার মেধা চায় না। একটি মেধাবী গোষ্ঠী রাষ্ট্র পরিচালনা করবে এটাই গোটা বিশ্বের নীতি। কিন্তু এ সরকার সেই প্রক্রিয়াটি নষ্ট করে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার বিসিএসের ভাইভা পরীক্ষায় ২০০ নম্বর রেখেছে, যাতে নম্বর বাড়িয়ে দিয়ে দলীয় লোকদের নিয়োগ দেয়া যায়। এভাবে অনাচার তৈরি করেছে এ সরকার। কিন্তু তাদের লুণ্ঠনের রাজত্বের বিরুদ্ধে জাগরণ তৈরি হয়েছে। জনগণ মেনে নেয়নি তাদেরকে।’
রিজভী বলেন, ‘ভারতের অঙ্গরাজ্যগুলো যতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করে আমরা স্বাধীন দেশে বাস করেও স্বাধীন নই। এ কথাটিই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে। এরমাধ্যমে তিনি গোটা জাতিকে অবজ্ঞা করেছেন। অপমান করেছেন। এরআগে এমন দাসের মনোভাবাপন্ন কথা আমরা কখনো শুনিনি। মনে হয় নাইওর যেতে হলে যেমন স্বামীর অনুমতি লাগে তেমনই ভূমিকায় এখন আওয়ামী লীগ ডামি সরকার। কারণ আওয়ামী সরকার কখনো চায়নি দেশটা মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।’
তিনি আরো বলেন, ‘আজকে সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকেরা লুটপাট-দুর্নীতি করে ফুলে ফেঁপে উঠছে। তারা কিছু স্থাপনার ছবি দেখিয়ে উন্নয়নের কথা প্রচার করে শুধু। প্রকৃতপক্ষে তাদের লোকেরা বিদেশে টাকা পাচার করে বাড়ি-গাড়ি কিনছে। তাদের লোকদেরকে টাকার কুমির বানিয়ে দিয়েছে। তারা উন্নয়নের নামে ভেল্কিবাজি করছে। তাদের মন্ত্রী-এমপিদের বিদেশে বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফর প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘আজকে দ্বারে দ্বারে ঘুরে সরকার ঋণ পাচ্ছে না। চীনসহ কোনো দেশ শেখ হাসিনার সরকারকে আর ঋণ দিচ্ছে না। এটা হলো সরকারের ভুল ও লুটেরা নীতির কারণে।’
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি ধুঁকছেন। আমরা মোনাজাত করছি আল্লাহ যেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দ্রুত সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন।’
সংগঠনের সভাপতি কাজী মো: সেলিম রেজার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: মো: রফিকুল ইসলাম, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-সম্পাদক আবদুল বারী ড্যানি, অর্থনৈতিকবিষয়ক সহ-সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, যুবদলের সাবেক নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের ডা: তৌহিদুর রহমান আওয়ালসহ ওলামা দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।