বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শনিবারের (৩ আগস্ট) কর্মসূচি কেন্দ্র করে বগুড়ার জিরো পয়েন্ট সাতমাথা ও আশেপাশের এলাকায় পুলিশের সাথে ছাত্রদের সংঘর্ষ ঘটেছে।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জলেশ্বরীতলা এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এ সময় তারা টিয়ারশেল ছুঁড়েছে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বিকেল ৩টার পর থেকেই বগুড়াতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় জড়ো থাকেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। এরপর সাতমাথায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জড়ো হলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের সাথে সাতমাথায় সাধারণ মানুষকেও জড়ো হতে দেখা যায়। শহরের জলেশ্বরীতলার দিক থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবকদেরও মিছিলে আসতে দেখা গেছে। শহরের বড়গোলা দিক থেকে বিশাল একটি মিছিল এসে সাতমাথায় অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। শহরের এই প্রাণকেন্দ্রে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীরা সাতমাথামুখি সকল যানবাহন আটকে দেয়। একপর্যায়ে সাতমাথা ও তার প্রতিটি রাস্তা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা এ সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার ছাত্র জনতা অংশ নেন।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে একদল শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে সার্কিট হাউজ রোড় দিয়ে জলেশ্বরীতলার দিকে যাওয়ার সময় পুলিশ প্লাজার সামনে পুলিশকে লক্ষ্য করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশ টিয়ারসেল মারতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ নবাববাড়ী সড়কে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষের ওপর কমপক্ষে ১০-১২টি টিয়ারসেল ছুঁড়ে মারে। একপাশে টিয়ারসেল মারলেও সাতমাথায় বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিক্ষোভকারীরা সাতমাথা ছেড়ে চলে যায়। একটি মিছিল শেরপুর রোড ধরে যাওয়ার সময় পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ছাত্ররা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাতমাথার পাশের দু-একটা সড়কে পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছিল। পুলিশ টিয়ারসেল মেরে বিক্ষোভকারীদের হটানোর চেষ্টা করলে তারা ইট পাটকেল মেরে জবাব দেয়। বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা সার্কিট হাউজ, বগুড়া পুলিশ প্লাজা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং সাতমাথা ট্রাফিক পুলিশ বক্সে এ হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশ এ সময় ছাত্রদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করলে গেলে পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এরপর ছাত্ররা সংগঠিত হয়ে আবারো জিরো পয়েন্ট সাতমাথার দখল নিয়ে সমাবেশ করে। এ সময় সাতমাথা এলাকায় বিভিন্ন স্থানে আগুন জালিয়ে টিয়ারশেলের ঝাজ থেকে রক্ষার চেষ্টা করে ছাত্ররা। ছাত্ররা পুলিশী হামলার নিন্দা জানান। এসব ঘটনায় আহতের সংখ্যা জানা যায়নি।