সকল ক্ষেত্রে পরিচয় আমাদের একটাই, আমরা সবাই বাংলাদেশী : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেধক
  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা কেউ মসজিদে যাই, কেউ মন্দিরে বা প্যাগোডায় কিম্বা গীর্জায়। তেমনি কারো উৎসব ঈদ উল ফিতর, কারো বা দূর্গা পূজা কিম্বা বড়দিন অথবা বৈশাবী পূর্ণিমা, সেটাও আমার আপনার সবার অভিন্ন পরিচয় নয়। বাংলাদেশের মানচিত্রে আপনার ঠিকানা হতে পারে পাহাড়ে, কারো আবার সমতলে, কেউ বা থাকেন হাওরে আবার কেউ ছোট্ট দ্বীপে, নয়তো উপকূলের প্লাবন ভূমিতে কিম্বা সুন্দরবনের পাশে-সকল ক্ষেত্রে পরিচয় আমাদের একটাই, আমরা সবাই বাংলাদেশী।

তিনি বলেন, এমনকি যারা এই পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করেন, তারাও জনরোষ এড়িয়ে পালানোর সময় যে পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন, সেখানেও তাকে এই ‘বাংলাদেশী’ পরিচয়টিই ব্যবহার করতে হয়েছে।

দেশব্যাপী ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সমাবেশে কথাগুলো বলেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, এই পরিচয় আমার আপনার যোগ্যতার মূল্যায়নের সময় যেমন নিরপেক্ষভাবে ব্যবহার করতে হবে, ঠিক তেমনি আমাদের অপরাধের ক্ষেত্রেও থাকবে একই মাপকাঠি

তিনি আরো বলেন, সংখ্যা লঘুর কার্ড দিয়ে অনেক খেলা হয়েছে, সেটা দেশেও যেমন হয়েছে, দেশের বাইরেও কম হয়নি। নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে আর দেশকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্তে যুগ যুগ ধরে এই সংখ্যা লঘু-সংখ্যাগুরুর স্পর্শকাতর বিষয় আর নির্যাতনের কল্প কাহিনী ফেদে রাজনৈতিক সুবিধা নেয়ার অপচেষ্টা দেশে বিদেশে বার বার কারা করেছে সেটাও আমরা সবাই জানি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসের এই পুরনো খেলার পুনরাবৃত্তি এদেশে আর করতে দেয়া হবে না। আসুন আমরা এগুলোকে হয় কবর দিয়ে নিশ্চিহ্ন করি, নয়তো চিতায় পুড়িয়ে ভস্ম করে দেই।

এদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারীদের হাত থেকে এক ধর্মের উপাসনালয় আরেক ধর্ম অনুসারীরা ঐতিহ্যগতভাবে সুরক্ষিত রেখেছে যুগ যুগ ধরে, বার বার প্রমাণ করেছে এদেশে সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু বলে কিছু নেই। আমাদের সবারই এক ও অভিন্ন পরিচয়। আমরা সবাই বাংলাদেশী।

তিনি বলেন, শুধু কথায় নয়, কাজেও এটার প্রমাণ দিতে হবে যখনই প্রয়োজন হবে।

তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার দেশপ্রেম, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ত্যাগ আর শত সহস্র নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে বিএনপি জনগণের আস্থা আর বিশ্বাসের যে জায়গায় পৌঁছেছে কতিপয় বিপথগামীর হঠকারিতায় সেটা বিনষ্ট হতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে দল আপোষহীন, তিনি দলের কত শীর্ষে অবস্থান করেন সেটা বিবেচ্য নয়। সম্প্রতি চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে বিএনপি সেটার প্রমাণ রেখেছে বলেও জানান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস আর অনুশাসনকে পুঁজি করে যারা ধর্মীয় স্থাপনায় রাজনীতি করবে, বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করবে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে যারা ধর্ম বর্ণের বিভক্তিকে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে, নিজ নিজ এলাকায় ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে তাদের প্রতিহত করতে পরামর্শ দেন তিনি।

রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে দেশের সাংবিধানিক কাঠামো আর জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছে যেটা সংশোধন ও পরিমার্জনের জন্য এখনো উন্মুক্ত। তবে তিনি নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, যারা যে সংস্কারের প্রস্তাবনাই আনুন আমাদের সংস্কার প্রস্তাবে সেগুলোর সবই অন্তর্ভুক্ত আছে।

তিনি বলেন, বিজয় এখনো অনেক দূরে, সফলতার পথ অনেক দীর্ঘ, আমরা গত সতের বছর বিরোধী দলে ছিলাম, আজো আছি। এখন আত্মতুষ্টির সময় নয়, বরাবরের মতো তৃণমূল নেতাকর্মীরা অতন্দ্র প্রহরীর মত অতীতে যেমন সঙ্কটকালে দলের পাশে ছিলেন, আগামীতেও বাংলাদেশের জনমানুষের প্রত্যাশার ভাষা বুঝে তাদের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করলে বিএনপি দেশের মানুষকে একটা নতুন আর পরিবর্তিত বাংলাদেশ উপহার দিতে পারবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারেক রহমান।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।

শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
LifePharm