আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ও পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কিছু মানুষ অস্থির হয়ে গেছে। দেশে আগে সংস্কার হবে তারপর নির্বাচন। শুধু একটি নির্বাচনের জন্য ছাত্র-জনতা রক্ত দেয়নি, দেশের মানুষ জেল-জুলুম অত্যাচার সহ্য করেনি ও কোরআনের পাখি আল্লামা সাঈদী নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেননি। বরং দেশের সকল মানুষ আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, জীবন দিয়েছে- বাংলাদেশকে ইনসাফপূর্ণ ও কল্যাণময় রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য, বাংলাদেশকে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র করার জন্য। খুনি শেখ হাাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা, ভারতের দালালেরা রাষ্ট্রের প্রতিটি জায়গায় ঘাপটি মেরে আছে। তাই সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানে হলো যেই লাউ সেই কদু।’
বুধবার পিরোজপুর জিয়ানগরের ইন্দুরকানী ফজলুল করিম আলিম মাদরাসা মাঠে উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ একটি পাপিষ্ঠ দলের নাম মন্তব্য করে মাসুদ সাঈদী আরও বলেন, ‘আমি শেখ হাসিনাকে বলতে চাই, আপনার সাহস থাকলে দেশে আসুন। আপনার জন্য ফাঁসির রশি প্রস্তুত আছে। সকল শহীদ পরিবারের সামনে প্রকাশ্যে আপনার ফাঁসি হবে। আওয়ামী লীগ হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে অনুতপ্ত হয়ে একবারও ক্ষমা চায়নি। এরা নির্লজ্জ দল, এরা পাপিষ্ঠের দল। এদের মধ্যে এখনো কোনো অনুশোচনা নাই। সুতরাং এই পাপিষ্ঠ দল বাংলাদেশে রাজনীতি করার আর কোনো অধিকার রাখেনা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৭ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম, গুম, খুন, ফাঁসি ও নির্যাতন শেষে ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে যে পরিবর্তন পেয়েছি, তা শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্যই এই আত্মত্যাগ। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কল্যাণময় যে রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছেন এবং নিজের জীবনকেও উৎসর্গ করেছেন আমরা তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই।’
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি সেক্টরকে শেখ হাসিনা দুর্নীতি, লুটপাট এবং হাজারো অনিয়মে ধ্বংস করে দিয়েছেন। হাসিনা জুলাই অভ্যুত্থানের বীর যোদ্ধাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। আমরা আশা করছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার খুনি হাসিনাসহ এসবের হুকুমদাতাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।’
জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘এ দেশে আর কোন স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না। দেশের প্রশ্নে, স্বাধীনতার প্রশ্নে আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। যে বা যারা বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করবেন তাদেরকে দেশের জনগণ ঘৃনাভরে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে।’
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন জিয়ানগর উপজেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন পিরোজপুর জেলার সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ মো. জহিরুল হক, বর্তমান সভাপতি ছিদ্দিকুল ইসলাম খন্দকার, সহ-সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ জালাল, জেলা জামায়াতের নির্বাচন বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আলী হোসেন, সেক্রেটারি তৌহিদুর রহমান রাতুল প্রমুখ।